ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের শাসনামলে সংঘটিত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানে হতাহতের ঘটনার বিচারে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছে বিএনপি। দলটি জানায়, এখন পর্যন্ত ১৬৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে, তবে এ সংখ্যা ঘটনার তুলনায় যথেষ্ট নয় বলে মনে করছে দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা।
এ লক্ষ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে সম্প্রতি জেলা ও মহানগর ইউনিটের নেতাদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও আন্দোলনে হতাহতের প্রমাণ দ্রুত সংগ্রহ করে কেন্দ্রীয় দপ্তরে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তারেক রহমানের নির্দেশনায় কার্যক্রম
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সরাসরি এই প্রক্রিয়া তদারকি করছেন। দলের মামলাসমূহের সমন্বয়ক সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মো. সালাহ উদ্দিন খান জানান, ভুক্তভোগীদের মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে দল থেকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে।
আন্দোলনের হতাহতের পরিসংখ্যান
বিএনপি সূত্রে জানা যায়, জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে ৮৩৫ জন নিহত এবং ৫,০০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। এর মধ্যে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ৪২২ জন নেতাকর্মী নিহত এবং ২,০২৬ জন আহত হন।
এ ছাড়া ২০০৭ থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে ১,২৭৮ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে বিএনপির ৮১৩ জন নেতাকর্মী রয়েছেন।
পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা
বিএনপি জানিয়েছে, এ ঘটনায় আটজন সাবেক এসপিসহ অনেক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন কুমিল্লার সাবেক এসপি তানভীর, চাঁপাইনবাবগঞ্জের মাহবুব, যশোরের প্রলয় জোয়ার্দার এবং চট্টগ্রামের মিনা।
রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারের দাবি
দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ১৬ বছরে বিএনপির ৬০ লাখেরও বেশি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দেড় লাখ মামলা হয়েছে। এসব মামলা প্রত্যাহারের জন্য দলটি অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে।
বিএনপি আশা করছে, আইনি এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও রাজনৈতিক দমনপীড়নের সুষ্ঠু বিচারের পথ সুগম হবে।
