পুলিশে ফিরছেন চাকরিচ্যুতরা, শীর্ষস্থানীয় পদ ফের চুক্তিভিত্তিক

নতুন সরকারের অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসনের উদ্যোগে পূর্বের আমলে চাকরিচ্যুত পুলিশ কর্মকর্তাদের পুনর্বহালের প্রক্রিয়া জোরদার হয়েছে। ইতোমধ্যে চাকরিতে ফিরেছেন অন্তত ১৮ জন। বরখাস্ত ও ওএসডি করা কর্মকর্তাদের বেশ কয়েকজনকেও বিভাগীয় মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে পুনর্বহাল করা হয়েছে।

পুলিশের একজন সাবেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের কারণে চাকরি হারান। এর মধ্যে ছিলেন অতিরিক্ত আইজি এ কে মাহফুজুল হক এবং বেশ কয়েকজন ডিআইজি ও পুলিশ সুপার। বর্তমান সরকারের অধীনে তাঁদের অনেকেই পুনর্বহালের সুযোগ পাচ্ছেন।

চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের বিতর্ক

পুলিশের শীর্ষ পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের বিষয়ে বিভিন্ন মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বর্তমানে আইজিপি বাহারুল আলম এবং ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাদ আলীকে দুই বছরের জন্য চুক্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। র‍্যাবের মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমানের মেয়াদও এক বছর বাড়ানো হয়েছে।

সাবেক আইজি মোহাম্মদ নুরুল হুদা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের বিরোধিতা করে বলেছেন, “দক্ষ জনবলের অভাব থাকলেও ধারাবাহিক চুক্তি বাহিনীর শুদ্ধি কার্যক্রম ব্যাহত করতে পারে। চুক্তি দিলে তা ছয় মাস বা এক বছরের বেশি হওয়া উচিত নয়।”

বিভাগীয় মামলার সমাপ্তি

বিভিন্ন অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে অনেকেরই বিভাগীয় মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর মধ্যে ছিলেন নৌ পুলিশের সাবেক সুপার মো. আব্দুল্লাহ আরেফ এবং শিল্প পুলিশের সিদ্দিকুর রহমান। গরহাজির থাকার অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া শামীমা ইয়াসমিনকেও অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

রাজনৈতিক প্রভাবের অভিযোগ

অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, রাজনৈতিক প্রভাবের কারণেই কিছু কর্মকর্তা পুনর্বহাল হচ্ছেন। জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ ফিরোজ মিয়া বলেন, “যোগ্য কর্মকর্তাদের ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ প্রশংসনীয়, তবে এতে ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ প্রাধান্য পেলে পুলিশ প্রশাসনের ওপর আস্থার সংকট সৃষ্টি হতে পারে।”

নতুন প্রশাসনের এমন উদ্যোগ ইতিবাচক হিসেবে দেখা হলেও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ ও পুনর্বহালের মানদণ্ড নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *