চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে আলু, কেজি বেড়েছে ১৫ টাকা

দেশের বাজারে আলুর দাম কমছে না, বরং নতুন করে প্রতি কেজি আরও ১৫ টাকা বেড়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে এখন প্রতি কেজি আলু ৭০ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রায় দুই মাস ধরে বাজারে আলুর এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি নজরে এসেছে। এর আগে কখনো এত দীর্ঘ সময় ধরে আলুর দাম এত চড়া থাকেনি।

বাজার পরিস্থিতি

বিক্রেতারা অভিযোগ করছেন, তারা বেশি দামে কিনে এনে কম দামে বিক্রি করতে পারছেন না। পাইকারি বাজারে দাম বাড়লে খুচরা বাজারেও তা বেড়ে যায়। অন্যদিকে, ভোক্তারা বলছেন, কোল্ডস্টোরেজের মালিকদের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ ও আলু সংরক্ষণের মাধ্যমে বাজারে সিন্ডিকেট তৈরি হওয়ায় এই মূল্যবৃদ্ধি ঘটছে।

ক্যাবের বিশ্লেষণ

কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ-সভাপতি এসএম নাজির হোসেন মনে করেন, আলুর বাজার ব্যবস্থাপনায় ত্রুটিই এই দামের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য দায়ী। ক্যাবের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে,

  • কোল্ডস্টোরেজ মালিকদের সিন্ডিকেট: মাঠ পর্যায়ে নিজেদের ব্যাপারীদের মাধ্যমে কৃষকদের কাছ থেকে দাদন দিয়ে আলু সংগ্রহ করেন তারা।
  • বাজার নিয়ন্ত্রণ: ক্ষেত থেকে আলু ওঠার পর কোল্ডস্টোরেজে চলে যায়, তখনই এই সিন্ডিকেট পুরো বাজারের দাম নিয়ন্ত্রণ করে।
  • মধ্যস্বত্বভোগীর আধিক্য: কৃষক থেকে ভোক্তা পর্যন্ত সাত-আটটি স্তর অতিক্রম করে আলু পৌঁছায়, যার ফলে ধাপে ধাপে দাম বাড়ে।

টিসিবির উদ্যোগ

আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) খোলা ট্রাকের মাধ্যমে ৩০ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি শুরু করেছে। রাজধানীর ৫০টি স্পটে টিসিবির ট্রাক থেকে এই আলু বিক্রি করা হচ্ছে। টিসিবির এই কার্যক্রম চলবে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

বাজার বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ

বাজারের এই অস্থিতিশীলতা কমাতে কার্যকর বাজার ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি কোল্ডস্টোরেজ সিন্ডিকেট ভাঙার জন্য কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সরাসরি কৃষক থেকে পণ্য সংগ্রহের সুযোগ সৃষ্টি করে মধ্যস্বত্বভোগী কমানো গেলে এমন পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব বলে মনে করছেন তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *