বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। তিনি আগস্ট মাসে ভারতে পালিয়ে যান, যখন দেশে ব্যাপক আন্দোলনের পর তাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে যে তিনি আন্দোলনের সময় “মানবতাবিরোধী অপরাধে” জড়িত ছিলেন। সেই আন্দোলনে শত শত মানুষ মারা গিয়েছিল।
হাসিনা দীর্ঘ ২০ বছরেরও বেশি সময় বাংলাদেশ শাসন করেছেন। তার শাসনামল অনেকেই স্বৈরাচারী মনে করেন, কারণ তখন বিরোধী মতামত দমন করার জন্য কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হতো।
শুধু হাসিনাই নয়, তার সরকারে থাকা আরও ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। তাদের অনেকেই দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।
প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, হাসিনাকে ১৮ নভেম্বর আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তার দাবি, এই বছরের জুলাই-আগস্ট মাসে হওয়া সহিংসতার নেতৃত্বে ছিলেন হাসিনা।
এই সহিংসতা মূলত ছাত্রদের নেতৃত্বে একটি আন্দোলন থেকে শুরু হয়েছিল। সরকারী চাকরির কোটা পদ্ধতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ খুব দ্রুত গণআন্দোলনে রূপ নেয়, আর সেই সময়ের ঘটনাগুলো বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী হিসেবে ধরা হয়।
৭৭ বছর বয়সী শেখ হাসিনাকে পালানোর পর থেকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। শেষবার তাকে দিল্লির কাছে একটি সামরিক ঘাঁটিতে দেখা গিয়েছিল। ধারণা করা হয়েছিল, তিনি স্বল্প সময়ের জন্য ভারতে থাকবেন, কিন্তু অন্য কোনো দেশে আশ্রয় পাওয়ার চেষ্টা করেও সফল হননি।
ভারতে তার এই দীর্ঘ অবস্থান বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। বাংলাদেশের অনেকেই ক্ষুব্ধ যে তাকে ভারত আশ্রয় দিয়েছে।
বাংলাদেশের নতুন সরকার তার কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করেছে। দু’দেশের মধ্যে প্রত্যর্পণ চুক্তি রয়েছে, যা অনুযায়ী তাকে ফেরত পাঠানো সম্ভব। তবে চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, কোনো অপরাধ যদি “রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে” হয়ে থাকে, তাহলে প্রত্যর্পণ নাও করা হতে পারে।
শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জানিয়েছেন, তার মা বিচার মেনে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত। তার কথায়, “আমার মা কোনো অন্যায় করেননি।”